SlideShare a Scribd company logo
1 of 6
Download to read offline
Battle of Badr-war and peace
POST BY CLOTHTRA_CLOTHTRA1 LIFESTYLE WAR# BATTALE# NO COMMENTS
First victory over the infidels(ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ : এক সোনালীতম অধ্যায়)
বদর যুদ্ধের কারণসমূহ
মক্কার কুরাইশদের শত্রুতা; আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের ষড়যন্ত্র, মদিনার ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, আর্থিক কারণ, নাখলার
খণ্ডযুদ্ধ, আবু সুফিয়ানের কাফেলা আক্রমণের মিথ্যা গুজব।
Badr-war
দ্বিতীয় হিজরী সালে নাবী (‫)ﷺ‬ এর কাছে এই মর্মে খবর পৌঁছল যে, কুরাইশদের একটি বাণিজ্যিক কাফেলা
সিরিয়া হতে মক্কার পথে অগ্রসর হচ্ছে। কাফেলার নেতৃ ত্বে ছিল আবু সুফিয়ান। নাবী (‫)ﷺ‬ কাফেলাটির পিছু
ধাওয়া করার আহবান জানালেন। তবে এর জন্য বেশী প্রস্ত্ততি গ্রহণ করেন নি। দ্রুত বের হওয়ার প্রয়োজন ছিল
বলে এর জন্য বেশী সময় পান নি। তাই তিনি তিনশত তের জন সাহাবী নিয়ে বের হয়ে পড়লেন। তাদের কাছে
ছিল দুইটি ঘোড়া এবং সত্তরটি উট। লোকেরা পালাক্রমে আরোহন করতেন।
ঐ দিকে আবু সুফিয়ান নাবী (‫)ﷺ‬ এর বের হওয়ার কথা জানতে পেরে মক্কায় লোক পাঠিয়ে কাফেলার
হেফাজতের জন্য দ্রুত সাহায্যের আবেদন করল। সংবাদ পেয়ে তারা দ্রুত বের হয়ে পড়ল। আল্লাহ্ তা‘আলা
তাদের বের হওয়ার অবস্থা বর্ণনা করে বলেন-
‫اَل‬ َ
‫و‬
‫وا‬ُ‫ن‬‫و‬ُ‫ك‬َ‫ت‬
َ‫ِين‬‫ذ‬َّ‫ل‬‫ا‬َ‫ك‬
‫ُوا‬‫ج‬َ‫ر‬َ‫خ‬
ْ‫ِن‬‫م‬
ْ‫م‬ِ‫ه‬ ِ‫ار‬َ‫ي‬ِ‫د‬
‫ا‬ً‫ر‬َ‫ط‬َ‫ب‬
َ‫ء‬‫ا‬‫َئ‬ ِ‫ر‬ َ
‫و‬
ِ‫اس‬َّ‫ن‬‫ال‬
َ‫ُّون‬‫د‬ُ‫ص‬َ‫ي‬ َ
‫و‬
ْ‫ن‬َ‫ع‬
ِ‫يل‬ِ‫ب‬َ‫س‬
ِ‫هللا‬
ُ‫هللا‬ َ
‫و‬
‫ا‬َ‫م‬ِ‫ب‬
َ‫ون‬ُ‫ل‬َ‫م‬ْ‫ع‬َ‫ي‬
ٌ‫ِيط‬‫ح‬ُ‫م‬
‘‘আর তাদের মত হয়ে যেয়োনা, যারা বের হয়েছে নিজেদের অবস্থান থেকে গর্বিতভাবে এবং লোকদেরকে দেখাবার
উদ্দেশ্যে। আর আল্লাহর পথে তারা বাধা দান করত। বস্ত্ততঃ আল্লাহর আয়ত্তে রয়েছে সে সমস্ত বিষয় যা তারা
করে’’। (সূরা আনফাল-৮:৪৭) সুতরাং পূর্ব প্রস্ত্ততি ছাড়াই আল্লাহ্ তা‘আলা উভয় দলকে মুখোমুখী করে দিলেন।
আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন- ‘‘এমতাবস্থায় যদি তোমরা পারস্পরিক অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে, তবে তোমরা মতবিরোধে লিপ্ত
হতে’’। (সূরা আনফাল-৮: ৪২)
war and peace
ইবনে মাসউদ রাঃ হতে বর্ণীত । তিনি বলেন ,যা আমি করে থাকলে যে কোন সমপর্যায়ের বস্তু হতে তা আমার
নিকট অধিকতর প্রিয় মনে করতাম। এক সময় তিনি হুজুর সাঃ এর নিকট গিয়ে দেখতে পেলেন যে ,মুশ্রিকদের
বিরুদ্ধে অভিসম্পাত করতেছেন।
যাই হোক নাবী (‫)ﷺ‬ যখন কুরাইশদের বের হওয়ার কথা জানতে পারলেন, তখন সাহাবীদের সাথে পরামর্শ
করলেন।সেই পরামর্শ সভায় মুহাজিরগণ প্রথমে কথা বললেন এবং অত্যন্ত সুন্দর পরামর্শ দিলেন। অতঃপর তিনি
দ্বিতীয়বার পরামর্শ চাইলেন। এবারও মুহাজিরগণই কথা বললেন। তৃ তীয়বার পরামর্শ চাইলেন।এতে আনসারগণ
বুঝতে পারলেন যে, নাবী (‫)ﷺ‬ তাদেরকে উদ্দেশ্য করছেন এবার তাদের পরামর্শ শুনতে চাচ্ছেন। তাই সা’দ বিন
মুআয উঠে দাঁড়ালেন এবং আনসারদের পক্ষ হতে তিনি তাঁর সুপ্রসিদ্ধ কথাগুলো বললেন। তিনি তাতে রসূল
(‫)ﷺ‬ কে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন যে, আনসারগণ যুদ্ধ করার জন্য পূর্ণ প্রস্ত্তত রয়েছেন। সা’দ বিন মুআয
বললেন- হে আল্লাহর রসূল! আপনি সম্ভবত আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। ঐ আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার
প্রাণ রয়েছে। আপনি যদি আমাদেরকে ঘোড়া ছুটিয়ে সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে বলেন, তাহলে আমরা তাই করব। আপনি
আমাদেরকে যেখানে যেতে বলেন, আমরা সেখানেই যাবো। এমন কি বারাকুল গামাদ (লোহিত সাগরের অপর
প্রামেত্মর একটি অঞ্চলের নাম) পর্যন্ত যেতে বলেন, তাহলে আমরা সেখানে যেতেও দ্বিধাবোধ করবনা। মিকদাদ
বিন আসওয়াদও অনুরূপ কথা বললেন- মিকদাদ (রাঃ) বললেন- মুসা (আঃ) এর অনুসারীরা যেরূপ বলেছিল
আমরা সেরূপ বলবনা। তারা মুসাকে বলেছিল- আপনি এবং আপনার প্রভু তাদের (শত্রুদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন।
আমরা এখানেই বসে থাকব। আর আমরা বলছিঃ আমরা আপনার ডানে, বামে সামনে এবং পিছনে তথা চতু র্দিক
থেকেই যুদ্ধ করব। সাহাবীদের কথা শুনে বিশেষ করে এই দুই নেতার কথা শুনে নাবী (‫)ﷺ‬ খুব খুশী হলেন।
তিনি বললেন- তাহলে তোমরা আগে বাড়, সামনে চল এবং সুসংবাদ গ্রহণ কর। আল্লাহ্ আমাকে কাফেরদের দুই
দলের একটির উপর বিজয় দান করার ওয়াদা করেছেন। আর আমি কাফের নেতাদের নিহত হওয়ার স্থানগুলো
দেখতে পাচ্ছি।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ হতে বর্ণিত । তিনি বলেন বদরের যুদ্দের দিন হুজুর সাঃ দোয়া করতে গিয়ে বলেন হে
আল্লাহ! আমি তোমার ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতি পুরন করার জন্য প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ ! তু মি যদি চাও তারা
আমাদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করুক তা হলে তোমার ইবাদত করার জন্য আর কেউ থাকবে না এটু কু বলার পর
আবুবকর রাঃ তার হাত ধরে বললেন যথেষ্ট হয়েছে। তখন হুজুর সাঃ উঠলেন এবং শ্ত্রু দল অচিরেই পরাজিত
হবে এবং পলায়ান করবে এ আয়াত পাঠ করলেন।
রপর নাবী (‫)ﷺ‬ সামনে চলতে লাগলেন এবং বদর প্রান্তরে গিয়ে উপস্থিত হলেন। তিনি যখন মুশরিকদের
মুখোমুখী হলেন এবং উভয় দল পরস্পরকে দেখতে পেল, তখন রসূল (‫)ﷺ‬ আল্লাহর দরবারে উভয় হাত তু লে
দু’আ করতে লাগলেন এবং তাঁর প্রভু র সাহায্য প্রার্থনা করলেন। মুসলমানেরাও আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে
থাকলেন এবং আল্লাহর মদদ চাইলেন। আল্লাহ্ তা‘আলা এ সময় কুরআনের এই আয়াত নাযিল করলেন-
ْ‫ذ‬‫ِإ‬
َ‫ون‬ُ‫ِيث‬‫غ‬َ‫ت‬ْ‫س‬َ‫ت‬
ْ‫م‬ُ‫ك‬َّ‫ب‬َ‫ر‬
َ‫اب‬َ‫ج‬َ‫ت‬ْ‫اس‬َ‫ف‬
ْ‫م‬ُ‫ك‬َ‫ل‬
‫ي‬ِّ‫ن‬‫َأ‬
ْ‫م‬ُ‫ك‬ُّ‫د‬ِ‫م‬ُ‫م‬
ٍ‫ف‬ْ‫ل‬‫َأ‬ِ‫ب‬
َ‫ِن‬‫م‬
ِ‫ة‬َ‫ك‬‫ِئ‬ ‫اَل‬َ‫م‬ْ‫ال‬
َ‫ِين‬‫ف‬ِ‫د‬ْ‫ُر‬‫م‬
‘‘তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করছিলে স্বীয় প্রভু র নিকট, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান
করলেন যে, আমি তোমাদেরকে সাহায্য করব ধারাবাহিকভাবে আগত এক হাজার ফিরিস্তার মাধ্যমে’’। (সূরা
আনফাল-৯)
নবী মোহাম্মদ সা: কর্তৃ ক আনসার এবং মুহাজির নিয়ে গঠিত মাত্র ৩১০ বা এর কিছু বেশি জনের একটি মুসলিম
বাহিনী কুরাইশ বাহিনীর মোকাবেলা করার জন্য মদিনা থেকে ৮০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে বদর উপত্যকায় দ্বিতীয়
হিজরির ১৭ রমজান (৬২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ মার্চ ) মুসলিম বাহিনীর সাথে বিধর্মী কুরাইশদের সংঘর্ষ হয়। হজরত
মোহাম্মদ( সা:) স্বয়ং নিজে এ যুদ্ধ পরিচালনা করেন। হজরত মোহাম্মদ (সা:) মুসলিম সৈন্য সমাবেশের জন্য এমন
একটি স্থান বেছে নেন যেখানে সূর্যোদয়ের পর যুদ্ধ শুরু হলে কোনো মুসলমান সৈন্যের চোখে সূর্য-কিরণ পড়বে
না।
প্রথমে প্রাচীন আরব রেওয়াজ অনুসারে মল্লযুদ্ধ হয়। মহানবীর নির্দেশে হজরত আমির হামজা, হজরত আলী ও
আবু ওবায়দা কুরাইশ পক্ষের নেতা উতবা, শায়বা এবং ওয়ালিদ বিন উতবার সাথে মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এতে
শত্রুপক্ষীয় নেতৃ বৃন্দ শোচনীয়ভাবে পরাজিত ও নিহত হয়। উপায়ান্তর না দেখে আবু জেহেলের নেতৃ ত্বে কুরাইশগণ
মুসলমানদের পর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
battle of badr
আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রাঃ হতে বর্ণিত । তিন বলেন, বদর যুদ্ধের(battle of badr) দিন সেনাদের কাতারে
এদিক -ওদিক চেয়ে দেখলাম।আমার ডানে ২জন অল্প বয়স্ক যুবক দন্ডায়মাম।পাশে তাদের মত ২জন এত তরুন
থাকার কারনে আমি যেন নিজেকে নিরাপদ মনে করতে পারলাম না ।এ সময় তাদের একজন অন্য জন কে এড়িয়ে
জিজ্ঞেস করল চাচা জান ! আমাকে দেখিয়ে দিন ত আবু জেহেল কে?আমি বললাম ভাতিজা তাকে দিয়ে তু মি কি
করবে? সে বলল, আমি আল্লাহ তায়ালার নিকট ওয়াদা করেছি যে,তার দেখা পেলে আমি তাকে হত্যা করব বা
এজন্য নিজেই নিহত হব । অন্যজন একই ভাবে তার সঙ্গী কে এড়িয়ে আমার নিকট একি কথা জিজ্ঞেস করল
।তখন তাদের প্রতি কোতু হল হল।আমি তাদের উভয় কে ইশারায় আবু জাহেল কে দেখিয়ে দিলাম।তারা দুজন
শিকারি বাঘের মত ছোঁ মেড়ে আবু জাহেলের নিকট চলে গেল এবং তার উপর ঝাপিয়ে পড়ল আর তাকে হত্যা
করল । এরা দুজন ছিল আফ্রার ২ পুত্র মুআয ও মুআওয়ায।
যুদ্ধে জয়
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাত অবস্থায় এক সময় সামান্য তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে জেগে
উঠে বলেন, ‫أبشر‬
‫أبا‬
!‫بكر‬
‫أتانا‬
‫نصر‬
،‫هللا‬
‫هذا‬
‫جبريل‬
‫آخذ‬
‫بعنان‬
،‫فرسه‬
‫عليه‬
‫أداة‬
‫الحرب‬ - আবুবকর! সুসংবাদ নাও।
আল্লাহর সাহায্য এসে গেছে। ঐ যে জিব্রীল যুদ্ধসাজে সজ্জিত হয়ে তার ঘোড়ার লাগাম ধরে টিলার কাছে দাঁড়িয়ে
আছেন। অতঃপর তিনি ُ‫م‬َ‫ْز‬‫ه‬ُ‫ي‬َ‫س‬
ُ‫ع‬ْ‫م‬َ‫ج‬ْ‫ال‬
َ‫ن‬ ْ
‫و‬ُّ‫ل‬ َ
‫ُو‬‫ي‬ َ
‫و‬
َ‫ُر‬‫ب‬ُّ‫د‬‫ال‬ - (‘সত্বর দলটি পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পালাবে’)
মুসলিম বাহিনীর এই হামলার প্রচন্ডতার সাথে সাথে যোগ হয় ফেরেশতাগণের হামলা। ইকরিমা বিন আবু জাহল
(যিনি ঐ যুদ্ধে পিতার সাথে শরীক ছিলেন এবং মক্কা বিজয়ের পরে মুসলমান হন) বলেন, ঐদিন আমাদের
লোকদের মস্তক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যেতো, অথচ দেখা যেতো না কে মারলো (তাবাক্বাতে ইবনু সা‘দ)।
আবু দাঊদ আল-মাযেনী বলেন, আমি একজন মুশরিক সৈন্যকে মারতে উদ্যত হব। ইতিমধ্যে তার ছিন্ন মস্তক
আমার সামনে এসে পড়ল। আমি বুঝতেই পারলাম না, কে ওকে মারল’। রাসূলের চাচা আববাস যিনি
বাহ্যিকভাবে মুশরিক বাহিনীতে ছিলেন, জনৈক আনছার তাকে বন্দী করে আনলে, তিনি বললেন, আল্লাহর কসম!
আমাকে এ ব্যক্তি বন্দী করেনি। বরং যে ব্যক্তি বন্দী করেছে, তাকে এখন দেখতে পাচ্ছি না। তিনি একজন চুল
বিহীন মাথাওয়ালা ও সুন্দর চেহারার মানুষ এবং বিচিত্র বর্ণের একটি সুন্দর ঘোড়ায় তিনি সওয়ার ছিলেন।
আনছার বললেন, হে রাসূল! আমিই এনাকে বন্দী করেছি। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) উক্ত আনছারকে বললেন, ‫اسكت‬
‫فقد‬
‫أيدك‬
‫هللا‬
‫بملك‬
‫كريم‬ চুপ কর। আল্লাহ এক সম্মানিত ফেরেশতা দ্বারা তোমাকে সাহায্য করেছেন’। কোন কোন
হাদীছে এসেছে যে, ফেরেশতারা কোন মুশরিকের উপরে আক্রমণ করার ইচ্ছা করতেই আপনা-আপনি তার মস্তক
দেহ হ’তে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত (হাকেম)
মুসলিম বাহিনীর দুর্ধর্ষ আক্রমনে পর্যুদস্ত মুশরিক বাহিনী প্রাণভয়ে পালাতে থাকল। এ দৃশ্য দেখে তাদের ধরে
রাখার জন্য আবু জাহল তার লোকদের উদ্দেশ্যে জোরালো ভাষণ দিয়ে বলে উঠলো, সোরাক্বার ( এ সেই ইবলীস যে
মক্বাবাহিনীর সাথে বেশ ধরে এসেছিলো পরে পলায়ন করে) পলায়নে তোমরা ভেঙ্গে পড়ো না।সে আগে থেকেই
মুহাম্মাদের চর ছিল। ওৎবা, শায়বা, ওয়ালীদের মৃত্যুতেও ভীত হওয়ার কারণ নেই। কেননা তাড়াহুড়োর মধ্যে
তারা মারা পড়েছেন। লাত ও উযযার শপথ করে বলছি, ওদেরকে শক্ত করে রশি দিয়ে বেঁধে না ফেলা পর্যন্ত
আমরা ফিরে যাব না। অতএব তোমরা ওদেরকে মেরো না। বরং ধরো এবং বেঁধে ফেল’।
কিন্তু আবু জাহলের এই তর্জ ন-গর্জ ন অসার প্রমাণিত হ’ল। আনছারদের বানু সালামাহ গোত্রের কিশোর দু’ভাই
মু‘আয ও মু‘আউভিয বিন ‘আফরা তীব্র বেগে ছুটে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে ঢু কে পড়ল এবং মু‘আয প্রথম আঘাতেই
আবু জাহলের পা তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলল।
এ সময় তার কাঁধে ইকরিমা বিন আবু জাহলের তরবারির আঘাতে মু‘আযের একটি হাত কেটে ঝু লতে থাকলে সে
নিজের পা দিয়ে চেপে ধরে এক টানে সেটাকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলল। তারপর ছোট ভাই মু‘আউভিযের
আঘাতে আবু জাহল ধরাশায়ী হ’লে তারা উভয়ে রাসূলের কাছে এসে গর্বভরে বলে উঠলো হে রাসূল! আবু জাহলকে
আমি হত্যা করেছি।
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তোমাদের তরবারি মুছে ফেলেছ কি? তারা বলল, না। তারপর উভয়ের তরবারি
পরীক্ষা করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‫كالكما‬
‫قتله‬ ‘তোমরা উভয়ে তাকে হত্যা করেছ’। অবশ্য এই যুদ্ধে মু‘আউভিয
বিন আফরা পরে শহীদ হন এবং মু‘আয বিন আফরা হযরত উসমানের খেলাফতকাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।
যুদ্ধের ফলাফলঃThe beginning of golden age
এই যুদ্ধে মুসলিম পক্ষে ৬জন মুহাজির ও ৮ জন আনছার শহীদ হন। কাফের পক্ষে ৭০ জন নিহত ও ৭০ জন
নেতৃ স্থানীয় ব্যক্তি বন্দী হয়। তাদের বড় বড় ২৪ জন নেতাকে বদরের একটি পরিত্যক্ত দুর্গন্ধময় কূপে (‫)القليب‬
নিক্ষেপ করা হয়। তাদের মধ্যে হিজরতের প্রাক্কালে মক্কায় রাসূলকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারী আবু জাহল সহ ১৪ নেতার
১১ জন এই যুদ্ধে নিহত হয়। বাকী তিনজন আবু সুফিয়ান, জুবায়ের বিন মুতব‘ইম ও হাকীম বিন হেযাম পরে
মুসলমান হন।
যুদ্ধ শেষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বদরে তিনদিন অবস্থান করেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সব মাল তার নিকটে জমা করতে
বলেন। অতঃপর বদর থেকে রওয়ানা দিয়ে ছাফরা (‫)الصفراء‬ গিরি সংকট অতিক্রম করে একটি টিলার উপরে
গিয়ে বিশ্রাম করেন এবং সেখানে বসে গনীমতের সমস্ত মালের এক পঞ্চমাংশ বের করে নিয়ে বাকী মাল সৈন্যদের
মধ্যে সমভাবে বণ্টন করে দেন।
রাসূল (ছাঃ)-এর আগমনের একদিন পরে বন্দীদের কাফেলা মদীনায় পৌছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে
ছাহাবীগণের মধ্যে বণ্টন করে দেন এবং তাদের সাথে উত্তম ব্যবহারের আদেশ দেন। তাঁর নির্দেশ যথাযথভাবে
পালিত হয় এবং ছাহাবীগণ নিজেরা খেজুর খেয়ে বন্দীদের রুটি খাওয়ান। কেননা ঐ সময় মদীনায় খেজুর ছিল
সাধারণ খাদ্য এবং রুটি ছিল মূল্যবান খাদ্য।
অতঃপর তিনি ছাহাবীগণের সাথে পরামর্শ করেন। আবুবকর (রাঃ) তাদেরকে রক্তমূল্য নিয়ে ছেড়ে দিতে বলেন।
কেননা এর ফলে কাফেরদের বিরুদ্ধে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদের হেদায়াত
নছীব করতে পারেন এবং তারা আমাদের জন্য সাহায্যকারী হ’তে পারে। কিন্তু ওমর ফারূক (রাঃ) স্ব স্ব আত্মীয়কে
স্ব স্ব হস্তে হত্যা করার পরামর্শ দেন। দয়ার নবী আবু বকরের পরামর্শ গ্রহণ করলেন এবং অধিকাংশ বন্দীকে
রক্তমূল্য নিয়ে ছেড়ে দেন। আবুল ‘আছ সহ কয়েকজনকে রক্তমূল্য ছাড়াই মুক্তি দেন।
আবুল ‘আছ ছিল খাদীজার সহোদর বোনের ছেলে এবং রাসূল কন্যা যয়নবের স্বামী। কয়েকজনকে মাথা প্রতি ১০
জনকে লেখাপড়া শিখানোর বিনিময়ে মদীনাতেই রেখে দেন। তাদের মেয়াদ ছিল উত্তম রূপে পড়া ও লেখা শিক্ষা
দান করা পর্যন্ত। এর দ্বারা শিক্ষা বিস্তারের প্রতি রাসূলের আকুল আগ্রহের প্রমাণ মেলে। যা কোন যুদ্ধবন্দী
বিনিময়ের ইতিহাসে নযীর বিহীন।
Battle of Badr-war and peace.pdf

More Related Content

Featured

Content Methodology: A Best Practices Report (Webinar)
Content Methodology: A Best Practices Report (Webinar)Content Methodology: A Best Practices Report (Webinar)
Content Methodology: A Best Practices Report (Webinar)contently
 
How to Prepare For a Successful Job Search for 2024
How to Prepare For a Successful Job Search for 2024How to Prepare For a Successful Job Search for 2024
How to Prepare For a Successful Job Search for 2024Albert Qian
 
Social Media Marketing Trends 2024 // The Global Indie Insights
Social Media Marketing Trends 2024 // The Global Indie InsightsSocial Media Marketing Trends 2024 // The Global Indie Insights
Social Media Marketing Trends 2024 // The Global Indie InsightsKurio // The Social Media Age(ncy)
 
Trends In Paid Search: Navigating The Digital Landscape In 2024
Trends In Paid Search: Navigating The Digital Landscape In 2024Trends In Paid Search: Navigating The Digital Landscape In 2024
Trends In Paid Search: Navigating The Digital Landscape In 2024Search Engine Journal
 
5 Public speaking tips from TED - Visualized summary
5 Public speaking tips from TED - Visualized summary5 Public speaking tips from TED - Visualized summary
5 Public speaking tips from TED - Visualized summarySpeakerHub
 
ChatGPT and the Future of Work - Clark Boyd
ChatGPT and the Future of Work - Clark Boyd ChatGPT and the Future of Work - Clark Boyd
ChatGPT and the Future of Work - Clark Boyd Clark Boyd
 
Getting into the tech field. what next
Getting into the tech field. what next Getting into the tech field. what next
Getting into the tech field. what next Tessa Mero
 
Google's Just Not That Into You: Understanding Core Updates & Search Intent
Google's Just Not That Into You: Understanding Core Updates & Search IntentGoogle's Just Not That Into You: Understanding Core Updates & Search Intent
Google's Just Not That Into You: Understanding Core Updates & Search IntentLily Ray
 
Time Management & Productivity - Best Practices
Time Management & Productivity -  Best PracticesTime Management & Productivity -  Best Practices
Time Management & Productivity - Best PracticesVit Horky
 
The six step guide to practical project management
The six step guide to practical project managementThe six step guide to practical project management
The six step guide to practical project managementMindGenius
 
Beginners Guide to TikTok for Search - Rachel Pearson - We are Tilt __ Bright...
Beginners Guide to TikTok for Search - Rachel Pearson - We are Tilt __ Bright...Beginners Guide to TikTok for Search - Rachel Pearson - We are Tilt __ Bright...
Beginners Guide to TikTok for Search - Rachel Pearson - We are Tilt __ Bright...RachelPearson36
 
Unlocking the Power of ChatGPT and AI in Testing - A Real-World Look, present...
Unlocking the Power of ChatGPT and AI in Testing - A Real-World Look, present...Unlocking the Power of ChatGPT and AI in Testing - A Real-World Look, present...
Unlocking the Power of ChatGPT and AI in Testing - A Real-World Look, present...Applitools
 
12 Ways to Increase Your Influence at Work
12 Ways to Increase Your Influence at Work12 Ways to Increase Your Influence at Work
12 Ways to Increase Your Influence at WorkGetSmarter
 
Ride the Storm: Navigating Through Unstable Periods / Katerina Rudko (Belka G...
Ride the Storm: Navigating Through Unstable Periods / Katerina Rudko (Belka G...Ride the Storm: Navigating Through Unstable Periods / Katerina Rudko (Belka G...
Ride the Storm: Navigating Through Unstable Periods / Katerina Rudko (Belka G...DevGAMM Conference
 
Barbie - Brand Strategy Presentation
Barbie - Brand Strategy PresentationBarbie - Brand Strategy Presentation
Barbie - Brand Strategy PresentationErica Santiago
 
Good Stuff Happens in 1:1 Meetings: Why you need them and how to do them well
Good Stuff Happens in 1:1 Meetings: Why you need them and how to do them wellGood Stuff Happens in 1:1 Meetings: Why you need them and how to do them well
Good Stuff Happens in 1:1 Meetings: Why you need them and how to do them wellSaba Software
 

Featured (20)

Content Methodology: A Best Practices Report (Webinar)
Content Methodology: A Best Practices Report (Webinar)Content Methodology: A Best Practices Report (Webinar)
Content Methodology: A Best Practices Report (Webinar)
 
How to Prepare For a Successful Job Search for 2024
How to Prepare For a Successful Job Search for 2024How to Prepare For a Successful Job Search for 2024
How to Prepare For a Successful Job Search for 2024
 
Social Media Marketing Trends 2024 // The Global Indie Insights
Social Media Marketing Trends 2024 // The Global Indie InsightsSocial Media Marketing Trends 2024 // The Global Indie Insights
Social Media Marketing Trends 2024 // The Global Indie Insights
 
Trends In Paid Search: Navigating The Digital Landscape In 2024
Trends In Paid Search: Navigating The Digital Landscape In 2024Trends In Paid Search: Navigating The Digital Landscape In 2024
Trends In Paid Search: Navigating The Digital Landscape In 2024
 
5 Public speaking tips from TED - Visualized summary
5 Public speaking tips from TED - Visualized summary5 Public speaking tips from TED - Visualized summary
5 Public speaking tips from TED - Visualized summary
 
ChatGPT and the Future of Work - Clark Boyd
ChatGPT and the Future of Work - Clark Boyd ChatGPT and the Future of Work - Clark Boyd
ChatGPT and the Future of Work - Clark Boyd
 
Getting into the tech field. what next
Getting into the tech field. what next Getting into the tech field. what next
Getting into the tech field. what next
 
Google's Just Not That Into You: Understanding Core Updates & Search Intent
Google's Just Not That Into You: Understanding Core Updates & Search IntentGoogle's Just Not That Into You: Understanding Core Updates & Search Intent
Google's Just Not That Into You: Understanding Core Updates & Search Intent
 
How to have difficult conversations
How to have difficult conversations How to have difficult conversations
How to have difficult conversations
 
Introduction to Data Science
Introduction to Data ScienceIntroduction to Data Science
Introduction to Data Science
 
Time Management & Productivity - Best Practices
Time Management & Productivity -  Best PracticesTime Management & Productivity -  Best Practices
Time Management & Productivity - Best Practices
 
The six step guide to practical project management
The six step guide to practical project managementThe six step guide to practical project management
The six step guide to practical project management
 
Beginners Guide to TikTok for Search - Rachel Pearson - We are Tilt __ Bright...
Beginners Guide to TikTok for Search - Rachel Pearson - We are Tilt __ Bright...Beginners Guide to TikTok for Search - Rachel Pearson - We are Tilt __ Bright...
Beginners Guide to TikTok for Search - Rachel Pearson - We are Tilt __ Bright...
 
Unlocking the Power of ChatGPT and AI in Testing - A Real-World Look, present...
Unlocking the Power of ChatGPT and AI in Testing - A Real-World Look, present...Unlocking the Power of ChatGPT and AI in Testing - A Real-World Look, present...
Unlocking the Power of ChatGPT and AI in Testing - A Real-World Look, present...
 
12 Ways to Increase Your Influence at Work
12 Ways to Increase Your Influence at Work12 Ways to Increase Your Influence at Work
12 Ways to Increase Your Influence at Work
 
ChatGPT webinar slides
ChatGPT webinar slidesChatGPT webinar slides
ChatGPT webinar slides
 
More than Just Lines on a Map: Best Practices for U.S Bike Routes
More than Just Lines on a Map: Best Practices for U.S Bike RoutesMore than Just Lines on a Map: Best Practices for U.S Bike Routes
More than Just Lines on a Map: Best Practices for U.S Bike Routes
 
Ride the Storm: Navigating Through Unstable Periods / Katerina Rudko (Belka G...
Ride the Storm: Navigating Through Unstable Periods / Katerina Rudko (Belka G...Ride the Storm: Navigating Through Unstable Periods / Katerina Rudko (Belka G...
Ride the Storm: Navigating Through Unstable Periods / Katerina Rudko (Belka G...
 
Barbie - Brand Strategy Presentation
Barbie - Brand Strategy PresentationBarbie - Brand Strategy Presentation
Barbie - Brand Strategy Presentation
 
Good Stuff Happens in 1:1 Meetings: Why you need them and how to do them well
Good Stuff Happens in 1:1 Meetings: Why you need them and how to do them wellGood Stuff Happens in 1:1 Meetings: Why you need them and how to do them well
Good Stuff Happens in 1:1 Meetings: Why you need them and how to do them well
 

Battle of Badr-war and peace.pdf

  • 1. Battle of Badr-war and peace POST BY CLOTHTRA_CLOTHTRA1 LIFESTYLE WAR# BATTALE# NO COMMENTS First victory over the infidels(ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ : এক সোনালীতম অধ্যায়) বদর যুদ্ধের কারণসমূহ মক্কার কুরাইশদের শত্রুতা; আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের ষড়যন্ত্র, মদিনার ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, আর্থিক কারণ, নাখলার খণ্ডযুদ্ধ, আবু সুফিয়ানের কাফেলা আক্রমণের মিথ্যা গুজব। Badr-war দ্বিতীয় হিজরী সালে নাবী (‫)ﷺ‬ এর কাছে এই মর্মে খবর পৌঁছল যে, কুরাইশদের একটি বাণিজ্যিক কাফেলা সিরিয়া হতে মক্কার পথে অগ্রসর হচ্ছে। কাফেলার নেতৃ ত্বে ছিল আবু সুফিয়ান। নাবী (‫)ﷺ‬ কাফেলাটির পিছু ধাওয়া করার আহবান জানালেন। তবে এর জন্য বেশী প্রস্ত্ততি গ্রহণ করেন নি। দ্রুত বের হওয়ার প্রয়োজন ছিল বলে এর জন্য বেশী সময় পান নি। তাই তিনি তিনশত তের জন সাহাবী নিয়ে বের হয়ে পড়লেন। তাদের কাছে ছিল দুইটি ঘোড়া এবং সত্তরটি উট। লোকেরা পালাক্রমে আরোহন করতেন।
  • 2. ঐ দিকে আবু সুফিয়ান নাবী (‫)ﷺ‬ এর বের হওয়ার কথা জানতে পেরে মক্কায় লোক পাঠিয়ে কাফেলার হেফাজতের জন্য দ্রুত সাহায্যের আবেদন করল। সংবাদ পেয়ে তারা দ্রুত বের হয়ে পড়ল। আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের বের হওয়ার অবস্থা বর্ণনা করে বলেন- ‫اَل‬ َ ‫و‬ ‫وا‬ُ‫ن‬‫و‬ُ‫ك‬َ‫ت‬ َ‫ِين‬‫ذ‬َّ‫ل‬‫ا‬َ‫ك‬ ‫ُوا‬‫ج‬َ‫ر‬َ‫خ‬ ْ‫ِن‬‫م‬ ْ‫م‬ِ‫ه‬ ِ‫ار‬َ‫ي‬ِ‫د‬ ‫ا‬ً‫ر‬َ‫ط‬َ‫ب‬ َ‫ء‬‫ا‬‫َئ‬ ِ‫ر‬ َ ‫و‬ ِ‫اس‬َّ‫ن‬‫ال‬ َ‫ُّون‬‫د‬ُ‫ص‬َ‫ي‬ َ ‫و‬ ْ‫ن‬َ‫ع‬ ِ‫يل‬ِ‫ب‬َ‫س‬ ِ‫هللا‬ ُ‫هللا‬ َ ‫و‬ ‫ا‬َ‫م‬ِ‫ب‬ َ‫ون‬ُ‫ل‬َ‫م‬ْ‫ع‬َ‫ي‬ ٌ‫ِيط‬‫ح‬ُ‫م‬ ‘‘আর তাদের মত হয়ে যেয়োনা, যারা বের হয়েছে নিজেদের অবস্থান থেকে গর্বিতভাবে এবং লোকদেরকে দেখাবার উদ্দেশ্যে। আর আল্লাহর পথে তারা বাধা দান করত। বস্ত্ততঃ আল্লাহর আয়ত্তে রয়েছে সে সমস্ত বিষয় যা তারা করে’’। (সূরা আনফাল-৮:৪৭) সুতরাং পূর্ব প্রস্ত্ততি ছাড়াই আল্লাহ্ তা‘আলা উভয় দলকে মুখোমুখী করে দিলেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন- ‘‘এমতাবস্থায় যদি তোমরা পারস্পরিক অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে, তবে তোমরা মতবিরোধে লিপ্ত হতে’’। (সূরা আনফাল-৮: ৪২) war and peace ইবনে মাসউদ রাঃ হতে বর্ণীত । তিনি বলেন ,যা আমি করে থাকলে যে কোন সমপর্যায়ের বস্তু হতে তা আমার নিকট অধিকতর প্রিয় মনে করতাম। এক সময় তিনি হুজুর সাঃ এর নিকট গিয়ে দেখতে পেলেন যে ,মুশ্রিকদের বিরুদ্ধে অভিসম্পাত করতেছেন। যাই হোক নাবী (‫)ﷺ‬ যখন কুরাইশদের বের হওয়ার কথা জানতে পারলেন, তখন সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করলেন।সেই পরামর্শ সভায় মুহাজিরগণ প্রথমে কথা বললেন এবং অত্যন্ত সুন্দর পরামর্শ দিলেন। অতঃপর তিনি দ্বিতীয়বার পরামর্শ চাইলেন। এবারও মুহাজিরগণই কথা বললেন। তৃ তীয়বার পরামর্শ চাইলেন।এতে আনসারগণ বুঝতে পারলেন যে, নাবী (‫)ﷺ‬ তাদেরকে উদ্দেশ্য করছেন এবার তাদের পরামর্শ শুনতে চাচ্ছেন। তাই সা’দ বিন মুআয উঠে দাঁড়ালেন এবং আনসারদের পক্ষ হতে তিনি তাঁর সুপ্রসিদ্ধ কথাগুলো বললেন। তিনি তাতে রসূল (‫)ﷺ‬ কে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন যে, আনসারগণ যুদ্ধ করার জন্য পূর্ণ প্রস্ত্তত রয়েছেন। সা’দ বিন মুআয বললেন- হে আল্লাহর রসূল! আপনি সম্ভবত আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। ঐ আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ রয়েছে। আপনি যদি আমাদেরকে ঘোড়া ছুটিয়ে সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে বলেন, তাহলে আমরা তাই করব। আপনি আমাদেরকে যেখানে যেতে বলেন, আমরা সেখানেই যাবো। এমন কি বারাকুল গামাদ (লোহিত সাগরের অপর প্রামেত্মর একটি অঞ্চলের নাম) পর্যন্ত যেতে বলেন, তাহলে আমরা সেখানে যেতেও দ্বিধাবোধ করবনা। মিকদাদ বিন আসওয়াদও অনুরূপ কথা বললেন- মিকদাদ (রাঃ) বললেন- মুসা (আঃ) এর অনুসারীরা যেরূপ বলেছিল আমরা সেরূপ বলবনা। তারা মুসাকে বলেছিল- আপনি এবং আপনার প্রভু তাদের (শত্রুদের) বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন। আমরা এখানেই বসে থাকব। আর আমরা বলছিঃ আমরা আপনার ডানে, বামে সামনে এবং পিছনে তথা চতু র্দিক থেকেই যুদ্ধ করব। সাহাবীদের কথা শুনে বিশেষ করে এই দুই নেতার কথা শুনে নাবী (‫)ﷺ‬ খুব খুশী হলেন। তিনি বললেন- তাহলে তোমরা আগে বাড়, সামনে চল এবং সুসংবাদ গ্রহণ কর। আল্লাহ্ আমাকে কাফেরদের দুই দলের একটির উপর বিজয় দান করার ওয়াদা করেছেন। আর আমি কাফের নেতাদের নিহত হওয়ার স্থানগুলো দেখতে পাচ্ছি। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ হতে বর্ণিত । তিনি বলেন বদরের যুদ্দের দিন হুজুর সাঃ দোয়া করতে গিয়ে বলেন হে আল্লাহ! আমি তোমার ওয়াদা ও প্রতিশ্রুতি পুরন করার জন্য প্রার্থনা করছি। হে আল্লাহ ! তু মি যদি চাও তারা
  • 3. আমাদের বিরুদ্ধে জয় লাভ করুক তা হলে তোমার ইবাদত করার জন্য আর কেউ থাকবে না এটু কু বলার পর আবুবকর রাঃ তার হাত ধরে বললেন যথেষ্ট হয়েছে। তখন হুজুর সাঃ উঠলেন এবং শ্ত্রু দল অচিরেই পরাজিত হবে এবং পলায়ান করবে এ আয়াত পাঠ করলেন। রপর নাবী (‫)ﷺ‬ সামনে চলতে লাগলেন এবং বদর প্রান্তরে গিয়ে উপস্থিত হলেন। তিনি যখন মুশরিকদের মুখোমুখী হলেন এবং উভয় দল পরস্পরকে দেখতে পেল, তখন রসূল (‫)ﷺ‬ আল্লাহর দরবারে উভয় হাত তু লে দু’আ করতে লাগলেন এবং তাঁর প্রভু র সাহায্য প্রার্থনা করলেন। মুসলমানেরাও আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে থাকলেন এবং আল্লাহর মদদ চাইলেন। আল্লাহ্ তা‘আলা এ সময় কুরআনের এই আয়াত নাযিল করলেন- ْ‫ذ‬‫ِإ‬ َ‫ون‬ُ‫ِيث‬‫غ‬َ‫ت‬ْ‫س‬َ‫ت‬ ْ‫م‬ُ‫ك‬َّ‫ب‬َ‫ر‬ َ‫اب‬َ‫ج‬َ‫ت‬ْ‫اس‬َ‫ف‬ ْ‫م‬ُ‫ك‬َ‫ل‬ ‫ي‬ِّ‫ن‬‫َأ‬ ْ‫م‬ُ‫ك‬ُّ‫د‬ِ‫م‬ُ‫م‬ ٍ‫ف‬ْ‫ل‬‫َأ‬ِ‫ب‬ َ‫ِن‬‫م‬ ِ‫ة‬َ‫ك‬‫ِئ‬ ‫اَل‬َ‫م‬ْ‫ال‬ َ‫ِين‬‫ف‬ِ‫د‬ْ‫ُر‬‫م‬ ‘‘তোমরা যখন ফরিয়াদ করতে আরম্ভ করছিলে স্বীয় প্রভু র নিকট, তখন তিনি তোমাদের ফরিয়াদের মঞ্জুরী দান করলেন যে, আমি তোমাদেরকে সাহায্য করব ধারাবাহিকভাবে আগত এক হাজার ফিরিস্তার মাধ্যমে’’। (সূরা আনফাল-৯) নবী মোহাম্মদ সা: কর্তৃ ক আনসার এবং মুহাজির নিয়ে গঠিত মাত্র ৩১০ বা এর কিছু বেশি জনের একটি মুসলিম বাহিনী কুরাইশ বাহিনীর মোকাবেলা করার জন্য মদিনা থেকে ৮০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে বদর উপত্যকায় দ্বিতীয় হিজরির ১৭ রমজান (৬২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ মার্চ ) মুসলিম বাহিনীর সাথে বিধর্মী কুরাইশদের সংঘর্ষ হয়। হজরত মোহাম্মদ( সা:) স্বয়ং নিজে এ যুদ্ধ পরিচালনা করেন। হজরত মোহাম্মদ (সা:) মুসলিম সৈন্য সমাবেশের জন্য এমন একটি স্থান বেছে নেন যেখানে সূর্যোদয়ের পর যুদ্ধ শুরু হলে কোনো মুসলমান সৈন্যের চোখে সূর্য-কিরণ পড়বে না। প্রথমে প্রাচীন আরব রেওয়াজ অনুসারে মল্লযুদ্ধ হয়। মহানবীর নির্দেশে হজরত আমির হামজা, হজরত আলী ও আবু ওবায়দা কুরাইশ পক্ষের নেতা উতবা, শায়বা এবং ওয়ালিদ বিন উতবার সাথে মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এতে শত্রুপক্ষীয় নেতৃ বৃন্দ শোচনীয়ভাবে পরাজিত ও নিহত হয়। উপায়ান্তর না দেখে আবু জেহেলের নেতৃ ত্বে কুরাইশগণ মুসলমানদের পর ঝাঁপিয়ে পড়ে। battle of badr আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রাঃ হতে বর্ণিত । তিন বলেন, বদর যুদ্ধের(battle of badr) দিন সেনাদের কাতারে এদিক -ওদিক চেয়ে দেখলাম।আমার ডানে ২জন অল্প বয়স্ক যুবক দন্ডায়মাম।পাশে তাদের মত ২জন এত তরুন থাকার কারনে আমি যেন নিজেকে নিরাপদ মনে করতে পারলাম না ।এ সময় তাদের একজন অন্য জন কে এড়িয়ে জিজ্ঞেস করল চাচা জান ! আমাকে দেখিয়ে দিন ত আবু জেহেল কে?আমি বললাম ভাতিজা তাকে দিয়ে তু মি কি করবে? সে বলল, আমি আল্লাহ তায়ালার নিকট ওয়াদা করেছি যে,তার দেখা পেলে আমি তাকে হত্যা করব বা এজন্য নিজেই নিহত হব । অন্যজন একই ভাবে তার সঙ্গী কে এড়িয়ে আমার নিকট একি কথা জিজ্ঞেস করল ।তখন তাদের প্রতি কোতু হল হল।আমি তাদের উভয় কে ইশারায় আবু জাহেল কে দেখিয়ে দিলাম।তারা দুজন
  • 4. শিকারি বাঘের মত ছোঁ মেড়ে আবু জাহেলের নিকট চলে গেল এবং তার উপর ঝাপিয়ে পড়ল আর তাকে হত্যা করল । এরা দুজন ছিল আফ্রার ২ পুত্র মুআয ও মুআওয়ায। যুদ্ধে জয় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ছালাত অবস্থায় এক সময় সামান্য তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। অতঃপর তিনি হাসতে হাসতে জেগে উঠে বলেন, ‫أبشر‬ ‫أبا‬ !‫بكر‬ ‫أتانا‬ ‫نصر‬ ،‫هللا‬ ‫هذا‬ ‫جبريل‬ ‫آخذ‬ ‫بعنان‬ ،‫فرسه‬ ‫عليه‬ ‫أداة‬ ‫الحرب‬ - আবুবকর! সুসংবাদ নাও। আল্লাহর সাহায্য এসে গেছে। ঐ যে জিব্রীল যুদ্ধসাজে সজ্জিত হয়ে তার ঘোড়ার লাগাম ধরে টিলার কাছে দাঁড়িয়ে আছেন। অতঃপর তিনি ُ‫م‬َ‫ْز‬‫ه‬ُ‫ي‬َ‫س‬ ُ‫ع‬ْ‫م‬َ‫ج‬ْ‫ال‬ َ‫ن‬ ْ ‫و‬ُّ‫ل‬ َ ‫ُو‬‫ي‬ َ ‫و‬ َ‫ُر‬‫ب‬ُّ‫د‬‫ال‬ - (‘সত্বর দলটি পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে পালাবে’) মুসলিম বাহিনীর এই হামলার প্রচন্ডতার সাথে সাথে যোগ হয় ফেরেশতাগণের হামলা। ইকরিমা বিন আবু জাহল (যিনি ঐ যুদ্ধে পিতার সাথে শরীক ছিলেন এবং মক্কা বিজয়ের পরে মুসলমান হন) বলেন, ঐদিন আমাদের লোকদের মস্তক দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যেতো, অথচ দেখা যেতো না কে মারলো (তাবাক্বাতে ইবনু সা‘দ)। আবু দাঊদ আল-মাযেনী বলেন, আমি একজন মুশরিক সৈন্যকে মারতে উদ্যত হব। ইতিমধ্যে তার ছিন্ন মস্তক আমার সামনে এসে পড়ল। আমি বুঝতেই পারলাম না, কে ওকে মারল’। রাসূলের চাচা আববাস যিনি বাহ্যিকভাবে মুশরিক বাহিনীতে ছিলেন, জনৈক আনছার তাকে বন্দী করে আনলে, তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমাকে এ ব্যক্তি বন্দী করেনি। বরং যে ব্যক্তি বন্দী করেছে, তাকে এখন দেখতে পাচ্ছি না। তিনি একজন চুল বিহীন মাথাওয়ালা ও সুন্দর চেহারার মানুষ এবং বিচিত্র বর্ণের একটি সুন্দর ঘোড়ায় তিনি সওয়ার ছিলেন। আনছার বললেন, হে রাসূল! আমিই এনাকে বন্দী করেছি। তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) উক্ত আনছারকে বললেন, ‫اسكت‬ ‫فقد‬ ‫أيدك‬ ‫هللا‬ ‫بملك‬ ‫كريم‬ চুপ কর। আল্লাহ এক সম্মানিত ফেরেশতা দ্বারা তোমাকে সাহায্য করেছেন’। কোন কোন হাদীছে এসেছে যে, ফেরেশতারা কোন মুশরিকের উপরে আক্রমণ করার ইচ্ছা করতেই আপনা-আপনি তার মস্তক দেহ হ’তে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত (হাকেম) মুসলিম বাহিনীর দুর্ধর্ষ আক্রমনে পর্যুদস্ত মুশরিক বাহিনী প্রাণভয়ে পালাতে থাকল। এ দৃশ্য দেখে তাদের ধরে রাখার জন্য আবু জাহল তার লোকদের উদ্দেশ্যে জোরালো ভাষণ দিয়ে বলে উঠলো, সোরাক্বার ( এ সেই ইবলীস যে মক্বাবাহিনীর সাথে বেশ ধরে এসেছিলো পরে পলায়ন করে) পলায়নে তোমরা ভেঙ্গে পড়ো না।সে আগে থেকেই মুহাম্মাদের চর ছিল। ওৎবা, শায়বা, ওয়ালীদের মৃত্যুতেও ভীত হওয়ার কারণ নেই। কেননা তাড়াহুড়োর মধ্যে তারা মারা পড়েছেন। লাত ও উযযার শপথ করে বলছি, ওদেরকে শক্ত করে রশি দিয়ে বেঁধে না ফেলা পর্যন্ত আমরা ফিরে যাব না। অতএব তোমরা ওদেরকে মেরো না। বরং ধরো এবং বেঁধে ফেল’। কিন্তু আবু জাহলের এই তর্জ ন-গর্জ ন অসার প্রমাণিত হ’ল। আনছারদের বানু সালামাহ গোত্রের কিশোর দু’ভাই মু‘আয ও মু‘আউভিয বিন ‘আফরা তীব্র বেগে ছুটে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে ঢু কে পড়ল এবং মু‘আয প্রথম আঘাতেই আবু জাহলের পা তার দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলল।
  • 5. এ সময় তার কাঁধে ইকরিমা বিন আবু জাহলের তরবারির আঘাতে মু‘আযের একটি হাত কেটে ঝু লতে থাকলে সে নিজের পা দিয়ে চেপে ধরে এক টানে সেটাকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলল। তারপর ছোট ভাই মু‘আউভিযের আঘাতে আবু জাহল ধরাশায়ী হ’লে তারা উভয়ে রাসূলের কাছে এসে গর্বভরে বলে উঠলো হে রাসূল! আবু জাহলকে আমি হত্যা করেছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তোমাদের তরবারি মুছে ফেলেছ কি? তারা বলল, না। তারপর উভয়ের তরবারি পরীক্ষা করে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‫كالكما‬ ‫قتله‬ ‘তোমরা উভয়ে তাকে হত্যা করেছ’। অবশ্য এই যুদ্ধে মু‘আউভিয বিন আফরা পরে শহীদ হন এবং মু‘আয বিন আফরা হযরত উসমানের খেলাফতকাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। যুদ্ধের ফলাফলঃThe beginning of golden age এই যুদ্ধে মুসলিম পক্ষে ৬জন মুহাজির ও ৮ জন আনছার শহীদ হন। কাফের পক্ষে ৭০ জন নিহত ও ৭০ জন নেতৃ স্থানীয় ব্যক্তি বন্দী হয়। তাদের বড় বড় ২৪ জন নেতাকে বদরের একটি পরিত্যক্ত দুর্গন্ধময় কূপে (‫)القليب‬ নিক্ষেপ করা হয়। তাদের মধ্যে হিজরতের প্রাক্কালে মক্কায় রাসূলকে হত্যার ষড়যন্ত্রকারী আবু জাহল সহ ১৪ নেতার ১১ জন এই যুদ্ধে নিহত হয়। বাকী তিনজন আবু সুফিয়ান, জুবায়ের বিন মুতব‘ইম ও হাকীম বিন হেযাম পরে মুসলমান হন। যুদ্ধ শেষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বদরে তিনদিন অবস্থান করেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) সব মাল তার নিকটে জমা করতে বলেন। অতঃপর বদর থেকে রওয়ানা দিয়ে ছাফরা (‫)الصفراء‬ গিরি সংকট অতিক্রম করে একটি টিলার উপরে গিয়ে বিশ্রাম করেন এবং সেখানে বসে গনীমতের সমস্ত মালের এক পঞ্চমাংশ বের করে নিয়ে বাকী মাল সৈন্যদের মধ্যে সমভাবে বণ্টন করে দেন। রাসূল (ছাঃ)-এর আগমনের একদিন পরে বন্দীদের কাফেলা মদীনায় পৌছে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাদেরকে ছাহাবীগণের মধ্যে বণ্টন করে দেন এবং তাদের সাথে উত্তম ব্যবহারের আদেশ দেন। তাঁর নির্দেশ যথাযথভাবে পালিত হয় এবং ছাহাবীগণ নিজেরা খেজুর খেয়ে বন্দীদের রুটি খাওয়ান। কেননা ঐ সময় মদীনায় খেজুর ছিল সাধারণ খাদ্য এবং রুটি ছিল মূল্যবান খাদ্য। অতঃপর তিনি ছাহাবীগণের সাথে পরামর্শ করেন। আবুবকর (রাঃ) তাদেরকে রক্তমূল্য নিয়ে ছেড়ে দিতে বলেন। কেননা এর ফলে কাফেরদের বিরুদ্ধে আমাদের শক্তি বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদের হেদায়াত নছীব করতে পারেন এবং তারা আমাদের জন্য সাহায্যকারী হ’তে পারে। কিন্তু ওমর ফারূক (রাঃ) স্ব স্ব আত্মীয়কে স্ব স্ব হস্তে হত্যা করার পরামর্শ দেন। দয়ার নবী আবু বকরের পরামর্শ গ্রহণ করলেন এবং অধিকাংশ বন্দীকে রক্তমূল্য নিয়ে ছেড়ে দেন। আবুল ‘আছ সহ কয়েকজনকে রক্তমূল্য ছাড়াই মুক্তি দেন। আবুল ‘আছ ছিল খাদীজার সহোদর বোনের ছেলে এবং রাসূল কন্যা যয়নবের স্বামী। কয়েকজনকে মাথা প্রতি ১০ জনকে লেখাপড়া শিখানোর বিনিময়ে মদীনাতেই রেখে দেন। তাদের মেয়াদ ছিল উত্তম রূপে পড়া ও লেখা শিক্ষা দান করা পর্যন্ত। এর দ্বারা শিক্ষা বিস্তারের প্রতি রাসূলের আকুল আগ্রহের প্রমাণ মেলে। যা কোন যুদ্ধবন্দী বিনিময়ের ইতিহাসে নযীর বিহীন।