SlideShare a Scribd company logo
কৈশোরকাল ও তার উপযোগী শিক্ষা
১। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মূল্যাঙ্ক ১ )
ক) কৈশোরকাল ও তার উপযোগী শিক্ষা পাঠটির লেখক কে ?
উঃ- ড° কাবেরী সাহা।
খ) কৈশোরকাল কোন শব্দ থেকে উদ্ভূত ?
উঃ- কৈশোরকাল অর্থাৎ যৌবনকাল শব্দটি ল্যাটিন Adolesure শব্দ থেকে উদ্ভূত।
গ) কৈশোরকাল শিশু বিকাশের কোন স্তর ?
উঃ- কৈশোরকাল শিশু বিকাশের তৃ তীয় স্তর ।
ঘ) কত সালে ভারত সরকার জাতীয় শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক শিক্ষাকে নতু ন করে সাজাবার জন্য সুপারিশ
করেছিল ?
উঃ- ১৯৮৬ সালে ভারত সরকার জাতীয় শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক শিক্ষাকে নতু ন করে সাজাবার জন্য সুপারিশ
করেছিল ।
ঙ) আন্তঃরাষ্ট্রীয় শিক্ষা আয়োগ কোন শিক্ষাকে ‘জীবনের সন্ধিক্ষণ' বলে অভিহিত করেছে ?
উঃ- আন্তঃরাষ্ট্রীয় শিক্ষা আয়োগ মাধ্যমিক শিক্ষাকে জীবনের সন্ধিক্ষণ বলে অবিহিত করেছে।
২। সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মূল্যাঙ্ক ২/৩)
ক) রুশো শিশু-বিকাশের ধারাকে কয়টি ভাগে ভাগ করেছিলেন? সেগুলো কী কী ?
উঃ- বিকাশের ধারাকে রুশো কয়েকটি স্তরে ভাগ করেছিলেন— (১) শৈশব কাল (২) বাল্যকাল (৩) যৌবন কাল
বা কৈশোর কাল এবং (৪) যৌবনোত্তর কাল ।
খ) স্ট্যানলি হল কৈশোরকালকে জীবনের জটিলতম এবং সংকটপূর্ণ সময় বলে মনে করেন কেন ?
উঃ- কৈশোর হল শিশুবিকাশের তৃ তীয় স্তর। সহজ সুন্দর শৈশব কালের বিপরীতে একটি কিশোর এইসময়
বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হয়। এইসময়ে তাদের আচরণ কখনো শিশুদের মতো, কখনও বা প্রাপ্তবয়স্কের মতো
হয়। সেইজন্য শিশুর জগত ও প্রাপ্তবয়স্কের জগতের সন্ধিক্ষণকে বয়ঃসন্ধি কাল বা কৈশোর কাল বলা হয়েছে।
কৈশোরের জগতে শৈশবের কল্পনা এবং প্রাপ্তবয়স্কের বাস্তব উপলব্ধি দুই-ই পরিলক্ষিত হয়। ষ্টেনলি হলের মতে
এই সময়টি জীবনের জটিলতম এবং সংকটপূর্ণ সময়।
গ) মনোবিজ্ঞানীরা কৈশোরকালের সময়সীমা কীভাবে ভাগ করেছেন ?
উঃ- মানবজীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ কাল হিসাবে চিহ্নিত কৈশোর বা বয়ঃসন্ধি কালের বহু বৈশিষ্ট্য অন্যান্য স্তরে
দেখা যায় না। মনোবৈজ্ঞানিকেরা কৈশোর কালের যে সময়সীমা (এগারো-বারো বৎসর থেকে আঠারো-উনিশ
বৎসর পর্যন্ত) চিহ্নিত করেছেন এরও ব্যতিক্রম দেখা যায় লিঙ্গ ভেদে, ব্যক্তিভেদে বা জলবায়ুর তারতম্য
অনুসারে। উপরিউক্ত কারণের ফলে ছেলেদের চাইতে মেয়েদের, শীতের দেশের শিশু থেকে গরম জলবায়ুর
দেশের শিশুদের কৈশোর অবস্থা প্রাপ্তি কিছু আগে ঘটে।
৩। বড়ো প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মূল্যাঙ্ক ৪/৫)
ক) কৈশোরকালের যে কোনো দুটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো।
উঃ- কৈশোর কালের বিকাশের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিকগুলি সম্বন্ধে এমনকী অভিভাবকদেরও অবহিত হওয়া খুবই
প্রয়োজন।
শারীরিক বিকাশ : কৈশোর কালের শারীরিক বিকাশ লক্ষণীয় বিষয়। এইসময় শরীরের নানাধরণের পরিবর্ত ন
ঘটে। তাদের দেহের আকার, ওজন, দৈর্ঘ্যবৃদ্ধি, গলার স্বরের পরিবর্ত নের সঙ্গে নারী-পুরুষের দেহ গঠনের
পার্থক্য দেখা যায়। প্রজনন ক্ষমতার প্রাপ্তি কিশোর কালের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এই সমস্ত অভাবনীয় পরিবর্ত ন
কিশোর-কিশোরীদের মনে আত্মচেতনার ভাব জাগ্রত করে। যার ফলে তাদের মনে অহেতু ক লজ্জা, ভয় বা
উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়। বিপরীত লিঙ্গকামিতা কৈশোর কালের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।
আবেগিক বিকাশ : দেহের আকস্মিক পরিবর্ত নের ফলে তাদের মনোজগতে এক বিরাট আলোড়নের সৃষ্টি হয়।
আবেগ প্রবণতার ফলে কিশোর-কিশোরীরা অনেকসময় অতি আশাবাদী বা নিরাশাবাদী হয়ে পড়ে। অনেকের
মধ্যে একাকীত্বের ভাব লক্ষ করা যায় বা অনেকে বিদ্রোহী মনোভাবাপন্ন হয়ে উঠে। এইসময় উপযুক্ত প্রণালীবদ্ধ
শিক্ষা দিতে না পারলে তারা বিভিন্ন সামাজিক পরিস্থিতিতে নানাধরণের জটিল অবস্থার সম্মুখীন হয়।
খ) জীবনের কোন সময়কে কৈশোরকাল বলা হয়? এই বয়সের সময়সীমা উল্লেখ করে বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উঃ- মানুষের জীবনের বাল্যকাল এবং যৌবনোত্তর কাল এর মধ্যবর্তী সময়কে কৈশোর কাল বলে । মানুষের
জীবনের কৈশোরকালের সময়সীমা হল ১২ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত । এই বয়সে মানুষের বিভিন্ন ধরণের
পরিবর্ত ন লক্ষ্য করা যায় । এই বয়সের বৈশিষ্ট্যগুলো হ’ল –
শারীরিক বিকাশ : কৈশোর কালের শারীরিক বিকাশ লক্ষণীয় বিষয়।এইসময় শরীরের নানা ধরনের পরিবর্ত ন
ঘটে । এই সময় দেহের আকার , ওজন , দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি গলার স্বরের পরিবর্ত নের সঙ্গে নারী পুরুষের দেহ গঠনের
পার্থক্য দেখা যায় । প্রজনন ক্ষমতার প্রাপ্তি কিশোর কালের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য । এই সমস্ত পরিবর্ত ন কিশোর –
কিশোরীদের মনে আত্মচেতনার ভাব জাগ্রত করে । যার ফলে মনে অহেতু কে লজ্জা , ভয় বা উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়
। বিপরীত লিঙ্গকামিকা কৈশোরকালের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ।
আবেগিক বিকাশ : দেহের আকস্মিক পরিবর্ত নের ফলে কিশোর – কিশোরীর মনোজগতে এক বিরাট
আলোড়নের সৃষ্টি হয় । আবেগের প্রবলতার ফলে কিশোর – কিশোরীরা অনেক সময় অতি আশাবাদী বা
নিরাশাবাদী হয়ে পড়ে । অনেকের মধ্যে একাকীত্বের ভাব লক্ষ্য করা যায় বা অনেকে বিদ্রোহী মনোভাবাপন্ন হয়ে
ওঠে । ফলে এই সময় নানা জটিলতার সন্মুখীন হতেও দেখা যায় ।
বৌদ্ধিক বিকাশ : শারীরিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে কৈশোর অবস্থায় দ্রুত মানসিক বিকাশ ঘটে । মস্তিষ্কের গঠন
প্রক্রিয়া পূর্ণতা পাওয়ার ফলে উচ্চস্তরীয় জ্ঞান ও দক্ষতামূলক শিক্ষালাভের জন্য তারা উপযুক্ত হয়ে উঠে ।
এইকালে কিশোর – কিশোরীদের বিশ্লেষণাত্মক এবং সংশ্লেষণাত্মক -শক্তির পূর্ণ বিকাশ ঘটে ।
সামাজিক বিকাশ : কৈশোর কালে সামাজিক বিকাশ অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । সমবয়সীদের সঙ্গে বন্ধু ত্ব ও
সহযোগিতার ভাব গড়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে জন্ম হয় প্রতিযোগিতার মনোভাব । চাল – চলন , পোষাক – পরিচ্ছদ ,
বাকভঙ্গী ধ্যান – ধারণা , বিভিন্ন মতাদর্শের ক্ষেত্রে এই বয়সে কিশোর , কিশোরীর মধ্যে এক স্বাতন্ত্র্য লক্ষ্য করা
যায় ।
নৈতিক বিকাশ : কৈশোরকালে মানুষের মধ্যে ন্যায় – অন্যায় সত্য – অসত্যের বিচার ক্ষমতা গড়ে উঠে । ধর্মের
প্রতি , দর্শনের প্রতি বা জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের প্রতি জিজ্ঞাসা জাগ্রত হবার ফলে মানসিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হতে
পারে । অনেক সময় প্রচলিত আদর্শ ত্যাগ করে বিবেচনা অনুসারে নৈতিকতা সমৃদ্ধ নতু ন সমাজ গড়ার চেষ্টা
করে ।
আত্মনির্ভ রশীলতা , আত্মসন্মানবোধ ও নিজস্বতার সংঘাত : কৈশোর অবস্থাতেই তারা হয়ে উঠে আত্মনির্ভ রশীল
। অন্যের উপর নির্ভ র না করে এই সময় নিজের শক্তি , সামর্থ্যে আস্থা রেখে নিজের কাজ করতে পছন্দ করে
তারা । বাধা নিষেধের সম্মুখীন হলে তারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে । কৈশোর কালে আদর্শবাদের সঙ্গে বাস্তবতার
সংঘতা ঘটে । এই সংঘাত তীব্র আলোড়নের সৃষ্টি করে । বীর পূজার প্রবৃত্তি এই বয়সের একটি লক্ষ্য বলা যেতে
পারে । যাকে ভালো লাগে তাকে জীবনের আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করার প্রবণতা এই বয়সের ছেলে মেয়েদের মধ্যে
দেখা যায় ।
গ) কী ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা কৈশোরকালের উপযোগী? উদাহরণ সহকারে বর্ণনা করো।
উঃ- কৈশোর কালের উপযোগী শিক্ষা : এই সময় সীমার ছেলে মেয়েদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার জন্য
১৯৫২-৫৩ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে তিনটি বিষেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিল। সেগুলো হল— (১) দেশের
সমসাময়িক, রাজনৈতিক, সামাজিক বা অর্থনৈতিক সমস্যার পটভূ মিতে বর্ত মান ও ভবিষ্যতের চাহিদাপূরণের
জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে গড়ে তোলা ; (২) ধর্ম নিরপেক্ষ দেশের সুনাগরিক হিসাবে প্রয়োজনীয় গুণাবলি আয়ত্ত করে
দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সহায়তা করা; (৩) জাতীয় সংহতির বিকাশ সাধন করা।
ভারত সরকার ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শিক্ষানীতি ১৯৮৬ সালে মাধ্যমিক শিক্ষাকে নতু ন করে ঢেলে সাজাবার জন্য
কিছু সুপারিশ করেছিল। এর মধ্যে প্রধান দুটো হল— (১) মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর একটি উপযুক্ত স্তর যেখানে ছেলে
মেয়েদের কলা, বিজ্ঞান এবং বাণিজ্য বিভাগের উপযোগিতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান প্রদান করা সম্ভব, যার ফলে
ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন বিভাগ বেছে নিতে পারে। (২) এই স্তরেই ছাত্র-ছাত্রীদের দেশের ইতিহাস,
সংস্কৃতি ও জাতীয় সংহতি, দেশের প্রতি দায়িত্বা, কর্ত ব্য ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা যেতে পারে। রাষ্ট্রীয়
শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক শিক্ষাকে বৃত্তিমুখী করবার জন্য ব্যবস্থা করে দেশের জনশক্তিকে অর্থনৈতিক বিকাশের
ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য প্রয়াস করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আন্তরাষ্ট্রীয় শিক্ষা আয়োগ (১৯৯৬)
মাধ্যমিক শিক্ষাকে জীবনের সন্ধিক্ষণ (crossroad of life) বলে অভিহিত করেছে। কারণ এই স্তরেই
ছাত্র-ছাত্রীরা ভবিষ্যত জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও কৌশল আয়ত্ব করে নিজ নিজ যোগ্যতা বা রুচি
অনুযায়ী জীবনের
পথে অগ্রসর হতে পারে। কেননা শিক্ষাই হল সমাজ পরিবর্ত ন করার এক শক্তিশালী মাধ্যম।
এক কথায় বলা চলে, মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের পূর্ণ ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটাতে
সাহায্য করে। এই স্তরে কোনোধরনের বিশেষীকরণ (Specialisation) পাঠক্রম নেই। সেই জন্য
নানাধরনের সহপাঠ্য ক্রমিক বিষয়গুলির মধ্য দিয়ে কিশোর কিশোরীদের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ অর্থাৎ শারীরিক,
মানসিক, বৌদ্ধিক, সামাজিক, নৈতিক, আবেগিক ও সৌন্দর্যবোধের বিকাশ ঘটানো সম্ভব।
ঘ) “আত্মনির্ভ রশীলতা, আত্মসম্মানবোধ ও নিজস্বতার সংঘাত” কৈশোরকালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য— আলোচনা
করো।
উঃ- আত্মনির্ভ রশীলতা, আত্মসম্মানবোধ ও নিজস্বতার সংঘাত : কৈশোর অবস্থাতেই তারা হয়ে উঠে
আত্মনির্ভ রশীল। অন্যের উপর নির্ভ র না করে এসিময় নিজের শক্তি-সামর্থে আস্থা রেখে নিজের কাজ করতে
পছন্দ করে। এই আত্মসম্মানবোধের প্রাবল্য কোনো ধরনের কটু সমালোচনা ছেলে-মেয়েরা সহ্য করতে পারেনা,
বাধা-নিষেধের সম্মুখীন হলে তারা বিদ্রোহী হয়ে উঠে। এই স্তরে নিজস্বতার সংখাতে ভু গতে দেখা যায়। এই
সংখাত এদের মনে জেগে উঠে বিপরীত ভাবাপন্ন অনুভূ তির ফলে। কৈশোর কালে আদর্শবাদের সঙ্গে বাস্তবতার
সংঘাত ঘটে এবং তার থেকে জন্ম হয় নিজস্বতার সংঘাত। সমাজ গঠনে এই ধরনের সংঘাত তীব্র আলোড়নের
সৃষ্টি করে। শক্তিশালী সংঘাতে সমাজের ভিত পরিবর্ত ন করে তারা নতু ন সমাজ গঠনে সাহায্য করে।
বীর পূজাৰ প্রবৃত্তি এই বয়সের একটি লক্ষণ বলা যেতে পারে। যাকে ভালো লাগে তাকে জীবনের আদর্শ হিসাবে
গ্রহণ করার প্রবণতা এই বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে দেখা যায়।
শারীরিক, মানসিক বিকাশের বাইরেও আরো কিছু বৈশিষ্ট্য এই বয়সে দেখা যায়, যেমন দিবাস্বপ্ন বা অলীক
কল্পনা। কাল্পনিক শক্তির অতিমাত্রায় বিকাশের ফলে তারা কল্পনার মোহজালে আবদ্ধ হয়ে বাস্তব জগত থেকে
সবে গিয়ে অবাস্তবের জগতে ভেসে বেড়ায়। তার সৃষ্টিশীল কর্মের জন্য কল্পনাও প্রয়োজন আছে। এই অবস্থায়
অনেকের মনে ভ্রমণ ও দুঃসাহসিক কর্মের স্পৃহা জেগে উঠে।
M MAB ®

More Related Content

More from M MAB ®

Magh Bihu or Maghar Domahi AHSEC Class 12 English notes
Magh Bihu or Maghar Domahi AHSEC Class 12 English notesMagh Bihu or Maghar Domahi AHSEC Class 12 English notes
Magh Bihu or Maghar Domahi AHSEC Class 12 English notes
M MAB ®
 
Bioresource of Assam AHSEC class 12 Biology notes
Bioresource of Assam AHSEC class 12 Biology notesBioresource of Assam AHSEC class 12 Biology notes
Bioresource of Assam AHSEC class 12 Biology notes
M MAB ®
 
Essay on Corona virus (COVID-19)
Essay on Corona virus (COVID-19)Essay on Corona virus (COVID-19)
Essay on Corona virus (COVID-19)
M MAB ®
 
Organisms and Populations
Organisms and PopulationsOrganisms and Populations
Organisms and Populations
M MAB ®
 
পদার্থ বিজ্ঞানের বর্ণনা
পদার্থ বিজ্ঞানের বর্ণনাপদার্থ বিজ্ঞানের বর্ণনা
পদার্থ বিজ্ঞানের বর্ণনা
M MAB ®
 
Congruence of Triangles
Congruence of TrianglesCongruence of Triangles
Congruence of Triangles
M MAB ®
 
Classification of element and periodicity in properties by M MAB ®
Classification of element and periodicity in properties by M MAB ®Classification of element and periodicity in properties by M MAB ®
Classification of element and periodicity in properties by M MAB ®
M MAB ®
 
প্রার্থনা পদ by M MAB ®
প্রার্থনা পদ by M MAB ®প্রার্থনা পদ by M MAB ®
প্রার্থনা পদ by M MAB ®
M MAB ®
 
Bengali Essay by M MAB ®
Bengali Essay by M MAB ®Bengali Essay by M MAB ®
Bengali Essay by M MAB ®
M MAB ®
 
Cell Structure by M MAB ®
Cell Structure by M MAB ®Cell Structure by M MAB ®
Cell Structure by M MAB ®
M MAB ®
 
নব্যনীতি
নব্যনীতি নব্যনীতি
নব্যনীতি
M MAB ®
 
Physical Exercise, Essay Writing by M MAB ®
Physical Exercise, Essay Writing by M MAB ®Physical Exercise, Essay Writing by M MAB ®
Physical Exercise, Essay Writing by M MAB ®
M MAB ®
 
Class 10 Parshian ch 3 & 4.pdf
Class 10 Parshian ch 3 & 4.pdfClass 10 Parshian ch 3 & 4.pdf
Class 10 Parshian ch 3 & 4.pdf
M MAB ®
 
M MAB ® logo
M MAB ® logoM MAB ® logo
M MAB ® logo
M MAB ®
 
Ideal General knowledge Class 4.pdf
Ideal General knowledge Class 4.pdfIdeal General knowledge Class 4.pdf
Ideal General knowledge Class 4.pdf
M MAB ®
 

More from M MAB ® (15)

Magh Bihu or Maghar Domahi AHSEC Class 12 English notes
Magh Bihu or Maghar Domahi AHSEC Class 12 English notesMagh Bihu or Maghar Domahi AHSEC Class 12 English notes
Magh Bihu or Maghar Domahi AHSEC Class 12 English notes
 
Bioresource of Assam AHSEC class 12 Biology notes
Bioresource of Assam AHSEC class 12 Biology notesBioresource of Assam AHSEC class 12 Biology notes
Bioresource of Assam AHSEC class 12 Biology notes
 
Essay on Corona virus (COVID-19)
Essay on Corona virus (COVID-19)Essay on Corona virus (COVID-19)
Essay on Corona virus (COVID-19)
 
Organisms and Populations
Organisms and PopulationsOrganisms and Populations
Organisms and Populations
 
পদার্থ বিজ্ঞানের বর্ণনা
পদার্থ বিজ্ঞানের বর্ণনাপদার্থ বিজ্ঞানের বর্ণনা
পদার্থ বিজ্ঞানের বর্ণনা
 
Congruence of Triangles
Congruence of TrianglesCongruence of Triangles
Congruence of Triangles
 
Classification of element and periodicity in properties by M MAB ®
Classification of element and periodicity in properties by M MAB ®Classification of element and periodicity in properties by M MAB ®
Classification of element and periodicity in properties by M MAB ®
 
প্রার্থনা পদ by M MAB ®
প্রার্থনা পদ by M MAB ®প্রার্থনা পদ by M MAB ®
প্রার্থনা পদ by M MAB ®
 
Bengali Essay by M MAB ®
Bengali Essay by M MAB ®Bengali Essay by M MAB ®
Bengali Essay by M MAB ®
 
Cell Structure by M MAB ®
Cell Structure by M MAB ®Cell Structure by M MAB ®
Cell Structure by M MAB ®
 
নব্যনীতি
নব্যনীতি নব্যনীতি
নব্যনীতি
 
Physical Exercise, Essay Writing by M MAB ®
Physical Exercise, Essay Writing by M MAB ®Physical Exercise, Essay Writing by M MAB ®
Physical Exercise, Essay Writing by M MAB ®
 
Class 10 Parshian ch 3 & 4.pdf
Class 10 Parshian ch 3 & 4.pdfClass 10 Parshian ch 3 & 4.pdf
Class 10 Parshian ch 3 & 4.pdf
 
M MAB ® logo
M MAB ® logoM MAB ® logo
M MAB ® logo
 
Ideal General knowledge Class 4.pdf
Ideal General knowledge Class 4.pdfIdeal General knowledge Class 4.pdf
Ideal General knowledge Class 4.pdf
 

কৈশোরকাল ও তার উপযোগী শিক্ষা by M MAB ®

  • 1. কৈশোরকাল ও তার উপযোগী শিক্ষা ১। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মূল্যাঙ্ক ১ ) ক) কৈশোরকাল ও তার উপযোগী শিক্ষা পাঠটির লেখক কে ? উঃ- ড° কাবেরী সাহা। খ) কৈশোরকাল কোন শব্দ থেকে উদ্ভূত ? উঃ- কৈশোরকাল অর্থাৎ যৌবনকাল শব্দটি ল্যাটিন Adolesure শব্দ থেকে উদ্ভূত। গ) কৈশোরকাল শিশু বিকাশের কোন স্তর ? উঃ- কৈশোরকাল শিশু বিকাশের তৃ তীয় স্তর । ঘ) কত সালে ভারত সরকার জাতীয় শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক শিক্ষাকে নতু ন করে সাজাবার জন্য সুপারিশ করেছিল ? উঃ- ১৯৮৬ সালে ভারত সরকার জাতীয় শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক শিক্ষাকে নতু ন করে সাজাবার জন্য সুপারিশ করেছিল । ঙ) আন্তঃরাষ্ট্রীয় শিক্ষা আয়োগ কোন শিক্ষাকে ‘জীবনের সন্ধিক্ষণ' বলে অভিহিত করেছে ? উঃ- আন্তঃরাষ্ট্রীয় শিক্ষা আয়োগ মাধ্যমিক শিক্ষাকে জীবনের সন্ধিক্ষণ বলে অবিহিত করেছে। ২। সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মূল্যাঙ্ক ২/৩) ক) রুশো শিশু-বিকাশের ধারাকে কয়টি ভাগে ভাগ করেছিলেন? সেগুলো কী কী ? উঃ- বিকাশের ধারাকে রুশো কয়েকটি স্তরে ভাগ করেছিলেন— (১) শৈশব কাল (২) বাল্যকাল (৩) যৌবন কাল বা কৈশোর কাল এবং (৪) যৌবনোত্তর কাল । খ) স্ট্যানলি হল কৈশোরকালকে জীবনের জটিলতম এবং সংকটপূর্ণ সময় বলে মনে করেন কেন ? উঃ- কৈশোর হল শিশুবিকাশের তৃ তীয় স্তর। সহজ সুন্দর শৈশব কালের বিপরীতে একটি কিশোর এইসময় বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হয়। এইসময়ে তাদের আচরণ কখনো শিশুদের মতো, কখনও বা প্রাপ্তবয়স্কের মতো হয়। সেইজন্য শিশুর জগত ও প্রাপ্তবয়স্কের জগতের সন্ধিক্ষণকে বয়ঃসন্ধি কাল বা কৈশোর কাল বলা হয়েছে। কৈশোরের জগতে শৈশবের কল্পনা এবং প্রাপ্তবয়স্কের বাস্তব উপলব্ধি দুই-ই পরিলক্ষিত হয়। ষ্টেনলি হলের মতে এই সময়টি জীবনের জটিলতম এবং সংকটপূর্ণ সময়। গ) মনোবিজ্ঞানীরা কৈশোরকালের সময়সীমা কীভাবে ভাগ করেছেন ? উঃ- মানবজীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ কাল হিসাবে চিহ্নিত কৈশোর বা বয়ঃসন্ধি কালের বহু বৈশিষ্ট্য অন্যান্য স্তরে দেখা যায় না। মনোবৈজ্ঞানিকেরা কৈশোর কালের যে সময়সীমা (এগারো-বারো বৎসর থেকে আঠারো-উনিশ বৎসর পর্যন্ত) চিহ্নিত করেছেন এরও ব্যতিক্রম দেখা যায় লিঙ্গ ভেদে, ব্যক্তিভেদে বা জলবায়ুর তারতম্য অনুসারে। উপরিউক্ত কারণের ফলে ছেলেদের চাইতে মেয়েদের, শীতের দেশের শিশু থেকে গরম জলবায়ুর দেশের শিশুদের কৈশোর অবস্থা প্রাপ্তি কিছু আগে ঘটে।
  • 2. ৩। বড়ো প্রশ্ন (প্রতিটি প্রশ্নের মূল্যাঙ্ক ৪/৫) ক) কৈশোরকালের যে কোনো দুটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করো। উঃ- কৈশোর কালের বিকাশের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিকগুলি সম্বন্ধে এমনকী অভিভাবকদেরও অবহিত হওয়া খুবই প্রয়োজন। শারীরিক বিকাশ : কৈশোর কালের শারীরিক বিকাশ লক্ষণীয় বিষয়। এইসময় শরীরের নানাধরণের পরিবর্ত ন ঘটে। তাদের দেহের আকার, ওজন, দৈর্ঘ্যবৃদ্ধি, গলার স্বরের পরিবর্ত নের সঙ্গে নারী-পুরুষের দেহ গঠনের পার্থক্য দেখা যায়। প্রজনন ক্ষমতার প্রাপ্তি কিশোর কালের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এই সমস্ত অভাবনীয় পরিবর্ত ন কিশোর-কিশোরীদের মনে আত্মচেতনার ভাব জাগ্রত করে। যার ফলে তাদের মনে অহেতু ক লজ্জা, ভয় বা উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়। বিপরীত লিঙ্গকামিতা কৈশোর কালের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। আবেগিক বিকাশ : দেহের আকস্মিক পরিবর্ত নের ফলে তাদের মনোজগতে এক বিরাট আলোড়নের সৃষ্টি হয়। আবেগ প্রবণতার ফলে কিশোর-কিশোরীরা অনেকসময় অতি আশাবাদী বা নিরাশাবাদী হয়ে পড়ে। অনেকের মধ্যে একাকীত্বের ভাব লক্ষ করা যায় বা অনেকে বিদ্রোহী মনোভাবাপন্ন হয়ে উঠে। এইসময় উপযুক্ত প্রণালীবদ্ধ শিক্ষা দিতে না পারলে তারা বিভিন্ন সামাজিক পরিস্থিতিতে নানাধরণের জটিল অবস্থার সম্মুখীন হয়। খ) জীবনের কোন সময়কে কৈশোরকাল বলা হয়? এই বয়সের সময়সীমা উল্লেখ করে বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। উঃ- মানুষের জীবনের বাল্যকাল এবং যৌবনোত্তর কাল এর মধ্যবর্তী সময়কে কৈশোর কাল বলে । মানুষের জীবনের কৈশোরকালের সময়সীমা হল ১২ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত । এই বয়সে মানুষের বিভিন্ন ধরণের পরিবর্ত ন লক্ষ্য করা যায় । এই বয়সের বৈশিষ্ট্যগুলো হ’ল – শারীরিক বিকাশ : কৈশোর কালের শারীরিক বিকাশ লক্ষণীয় বিষয়।এইসময় শরীরের নানা ধরনের পরিবর্ত ন ঘটে । এই সময় দেহের আকার , ওজন , দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি গলার স্বরের পরিবর্ত নের সঙ্গে নারী পুরুষের দেহ গঠনের পার্থক্য দেখা যায় । প্রজনন ক্ষমতার প্রাপ্তি কিশোর কালের এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য । এই সমস্ত পরিবর্ত ন কিশোর – কিশোরীদের মনে আত্মচেতনার ভাব জাগ্রত করে । যার ফলে মনে অহেতু কে লজ্জা , ভয় বা উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয় । বিপরীত লিঙ্গকামিকা কৈশোরকালের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য । আবেগিক বিকাশ : দেহের আকস্মিক পরিবর্ত নের ফলে কিশোর – কিশোরীর মনোজগতে এক বিরাট আলোড়নের সৃষ্টি হয় । আবেগের প্রবলতার ফলে কিশোর – কিশোরীরা অনেক সময় অতি আশাবাদী বা নিরাশাবাদী হয়ে পড়ে । অনেকের মধ্যে একাকীত্বের ভাব লক্ষ্য করা যায় বা অনেকে বিদ্রোহী মনোভাবাপন্ন হয়ে ওঠে । ফলে এই সময় নানা জটিলতার সন্মুখীন হতেও দেখা যায় । বৌদ্ধিক বিকাশ : শারীরিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে কৈশোর অবস্থায় দ্রুত মানসিক বিকাশ ঘটে । মস্তিষ্কের গঠন প্রক্রিয়া পূর্ণতা পাওয়ার ফলে উচ্চস্তরীয় জ্ঞান ও দক্ষতামূলক শিক্ষালাভের জন্য তারা উপযুক্ত হয়ে উঠে । এইকালে কিশোর – কিশোরীদের বিশ্লেষণাত্মক এবং সংশ্লেষণাত্মক -শক্তির পূর্ণ বিকাশ ঘটে । সামাজিক বিকাশ : কৈশোর কালে সামাজিক বিকাশ অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । সমবয়সীদের সঙ্গে বন্ধু ত্ব ও সহযোগিতার ভাব গড়ে উঠার সঙ্গে সঙ্গে জন্ম হয় প্রতিযোগিতার মনোভাব । চাল – চলন , পোষাক – পরিচ্ছদ , বাকভঙ্গী ধ্যান – ধারণা , বিভিন্ন মতাদর্শের ক্ষেত্রে এই বয়সে কিশোর , কিশোরীর মধ্যে এক স্বাতন্ত্র্য লক্ষ্য করা যায় । নৈতিক বিকাশ : কৈশোরকালে মানুষের মধ্যে ন্যায় – অন্যায় সত্য – অসত্যের বিচার ক্ষমতা গড়ে উঠে । ধর্মের প্রতি , দর্শনের প্রতি বা জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের প্রতি জিজ্ঞাসা জাগ্রত হবার ফলে মানসিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হতে পারে । অনেক সময় প্রচলিত আদর্শ ত্যাগ করে বিবেচনা অনুসারে নৈতিকতা সমৃদ্ধ নতু ন সমাজ গড়ার চেষ্টা করে ।
  • 3. আত্মনির্ভ রশীলতা , আত্মসন্মানবোধ ও নিজস্বতার সংঘাত : কৈশোর অবস্থাতেই তারা হয়ে উঠে আত্মনির্ভ রশীল । অন্যের উপর নির্ভ র না করে এই সময় নিজের শক্তি , সামর্থ্যে আস্থা রেখে নিজের কাজ করতে পছন্দ করে তারা । বাধা নিষেধের সম্মুখীন হলে তারা বিদ্রোহী হয়ে ওঠে । কৈশোর কালে আদর্শবাদের সঙ্গে বাস্তবতার সংঘতা ঘটে । এই সংঘাত তীব্র আলোড়নের সৃষ্টি করে । বীর পূজার প্রবৃত্তি এই বয়সের একটি লক্ষ্য বলা যেতে পারে । যাকে ভালো লাগে তাকে জীবনের আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করার প্রবণতা এই বয়সের ছেলে মেয়েদের মধ্যে দেখা যায় । গ) কী ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা কৈশোরকালের উপযোগী? উদাহরণ সহকারে বর্ণনা করো। উঃ- কৈশোর কালের উপযোগী শিক্ষা : এই সময় সীমার ছেলে মেয়েদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার জন্য ১৯৫২-৫৩ সালে মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে তিনটি বিষেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিল। সেগুলো হল— (১) দেশের সমসাময়িক, রাজনৈতিক, সামাজিক বা অর্থনৈতিক সমস্যার পটভূ মিতে বর্ত মান ও ভবিষ্যতের চাহিদাপূরণের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে গড়ে তোলা ; (২) ধর্ম নিরপেক্ষ দেশের সুনাগরিক হিসাবে প্রয়োজনীয় গুণাবলি আয়ত্ত করে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সহায়তা করা; (৩) জাতীয় সংহতির বিকাশ সাধন করা। ভারত সরকার ঘোষিত রাষ্ট্রীয় শিক্ষানীতি ১৯৮৬ সালে মাধ্যমিক শিক্ষাকে নতু ন করে ঢেলে সাজাবার জন্য কিছু সুপারিশ করেছিল। এর মধ্যে প্রধান দুটো হল— (১) মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর একটি উপযুক্ত স্তর যেখানে ছেলে মেয়েদের কলা, বিজ্ঞান এবং বাণিজ্য বিভাগের উপযোগিতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ জ্ঞান প্রদান করা সম্ভব, যার ফলে ছেলেমেয়েরা উচ্চশিক্ষার জন্য বিভিন্ন বিভাগ বেছে নিতে পারে। (২) এই স্তরেই ছাত্র-ছাত্রীদের দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় সংহতি, দেশের প্রতি দায়িত্বা, কর্ত ব্য ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা যেতে পারে। রাষ্ট্রীয় শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক শিক্ষাকে বৃত্তিমুখী করবার জন্য ব্যবস্থা করে দেশের জনশক্তিকে অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য প্রয়াস করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আন্তরাষ্ট্রীয় শিক্ষা আয়োগ (১৯৯৬) মাধ্যমিক শিক্ষাকে জীবনের সন্ধিক্ষণ (crossroad of life) বলে অভিহিত করেছে। কারণ এই স্তরেই ছাত্র-ছাত্রীরা ভবিষ্যত জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও কৌশল আয়ত্ব করে নিজ নিজ যোগ্যতা বা রুচি অনুযায়ী জীবনের পথে অগ্রসর হতে পারে। কেননা শিক্ষাই হল সমাজ পরিবর্ত ন করার এক শক্তিশালী মাধ্যম। এক কথায় বলা চলে, মাধ্যমিক শিক্ষাস্তর সাধারণ শিক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের পূর্ণ ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। এই স্তরে কোনোধরনের বিশেষীকরণ (Specialisation) পাঠক্রম নেই। সেই জন্য নানাধরনের সহপাঠ্য ক্রমিক বিষয়গুলির মধ্য দিয়ে কিশোর কিশোরীদের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ অর্থাৎ শারীরিক, মানসিক, বৌদ্ধিক, সামাজিক, নৈতিক, আবেগিক ও সৌন্দর্যবোধের বিকাশ ঘটানো সম্ভব। ঘ) “আত্মনির্ভ রশীলতা, আত্মসম্মানবোধ ও নিজস্বতার সংঘাত” কৈশোরকালের অন্যতম বৈশিষ্ট্য— আলোচনা করো। উঃ- আত্মনির্ভ রশীলতা, আত্মসম্মানবোধ ও নিজস্বতার সংঘাত : কৈশোর অবস্থাতেই তারা হয়ে উঠে আত্মনির্ভ রশীল। অন্যের উপর নির্ভ র না করে এসিময় নিজের শক্তি-সামর্থে আস্থা রেখে নিজের কাজ করতে পছন্দ করে। এই আত্মসম্মানবোধের প্রাবল্য কোনো ধরনের কটু সমালোচনা ছেলে-মেয়েরা সহ্য করতে পারেনা, বাধা-নিষেধের সম্মুখীন হলে তারা বিদ্রোহী হয়ে উঠে। এই স্তরে নিজস্বতার সংখাতে ভু গতে দেখা যায়। এই সংখাত এদের মনে জেগে উঠে বিপরীত ভাবাপন্ন অনুভূ তির ফলে। কৈশোর কালে আদর্শবাদের সঙ্গে বাস্তবতার সংঘাত ঘটে এবং তার থেকে জন্ম হয় নিজস্বতার সংঘাত। সমাজ গঠনে এই ধরনের সংঘাত তীব্র আলোড়নের সৃষ্টি করে। শক্তিশালী সংঘাতে সমাজের ভিত পরিবর্ত ন করে তারা নতু ন সমাজ গঠনে সাহায্য করে। বীর পূজাৰ প্রবৃত্তি এই বয়সের একটি লক্ষণ বলা যেতে পারে। যাকে ভালো লাগে তাকে জীবনের আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করার প্রবণতা এই বয়সের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে দেখা যায়। শারীরিক, মানসিক বিকাশের বাইরেও আরো কিছু বৈশিষ্ট্য এই বয়সে দেখা যায়, যেমন দিবাস্বপ্ন বা অলীক কল্পনা। কাল্পনিক শক্তির অতিমাত্রায় বিকাশের ফলে তারা কল্পনার মোহজালে আবদ্ধ হয়ে বাস্তব জগত থেকে সবে গিয়ে অবাস্তবের জগতে ভেসে বেড়ায়। তার সৃষ্টিশীল কর্মের জন্য কল্পনাও প্রয়োজন আছে। এই অবস্থায় অনেকের মনে ভ্রমণ ও দুঃসাহসিক কর্মের স্পৃহা জেগে উঠে।