অপেক্ষা – Opekkha By Humayun Ahmed Pdf অপেক্ষা হুমায়ূন আহমেদ রচিত একটি উপন্যাস। হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য উপন্যাসের মতোই এ উপন্যাসটির প্রেক্ষাপটও একটি মধ্যবিত্ত পরিবারকে ঘিরে। উপন্যাসটিতে একইসাথে মধ্যবিত্তের টানাপোড়েন এবং প্রিয় মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার নিদর্শন ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসগুলো সাধারণত আকারে ছোট হলেও অপেক্ষা উপন্যাসটি আকারে বেশ বড়। এর পৃষ্ঠা সংখ্যা ২২০। কাহিনীসংক্ষেপ Wikipedia স্ত্রী সুরাইয়া আর ৫ বছরের সন্তান ইমনকে নিয়ে ছিল হাসানুজ্জামানের ছোট পরিবার। তাদের এই সংসারে তাদের সাথে থাকত হাসানুজ্জামানের ছোট ভাই ফিরোজ। মাঝে মাঝে কয়েকদিনের জন্য তাদের মা বেড়াতে আসত। একদিন অফিসে যাওয়ার পর আর ফিরে আসে না হাসানুজ্জামান। নানাভাবে খোঁজাখুঁজির পরও তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু সুরাইয়া বিশ্বাস করে তার স্বামী একদিন ফিরে আসবে। আর এই অপেক্ষাতেই সে বছরগুলি পার করে দেয়। কিন্তু তার ব্যবহারে ভিন্নতা আসে। সে আস্তে আস্তে নিজেকে গুঁটিয়ে ফেলে। মাঝে মাঝেই অতি অল্প কারণেই তার ছেলে-মেয়েদের প্রতি অমানুষিক অত্যাচার করে। পরবর্তীতে সুরাইয়া তার সন্তানদের নিয়ে তার ভাইয়ের বাড়িতে যায়। ধীরে ধীরে ইমন বড় হয়। এক সময় এক পীর এসে সুরাইয়াকে বলে যেদিন ইমনের বিয়ে হবে সেদিন ইমনের বাবা ফিরে আসবে। একদিন বিয়ে হয় ইমনের। এভাবেই এগিয়ে চলে তাদের জীবন। রকমারি মানুষের জীবন কি চক্রের মত? চক্রের কোন শুরু নেই, শেষ নেই। মানব জীবনও কি তাই? রহস্যময় চক্রের ভেতর এই জীবন ঘুরপাক খেতে থাকে? শুরু নেই, শেষ নেই। চক্র ঘুরছে। এই চক্রের ভেতরে ঘুরপাক খেতে খেতে অপেক্ষা করে কেউ কেউ কিংবা সকলেই। কিসের অপেক্ষা? - হুমায়ূন আহমেদ’এর অপেক্ষা হাতে নিলে এই কথাগুলোই হয়তো সর্বপ্রথম চোখে পড়বে, মলাটের ভেতর সরু অক্ষরে লেখা। সাধারণত এখানে বইয়ের ছোট্ট একটা পরিচিতি লেখা থাকে। ভেতরে কি পেতে যাচ্ছেন, কি পড়তে যাচ্ছেন তার আকার ইঙ্গিত। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ এখানে তেমন কিছু লিখতে চাইলেন না। রহস্যে ঘিরে রাখলেন পাঠককে। মনে প্রশ্ন জাগিয়ে দিলেন। কয়টা পৃষ্ঠা উল্টে সামনে এগোলেই চার লাইনের ছোট্ট কবিতাংশ, ঘর খুলিয়া বাইর হইয়া জোছনা ধরতে যাই আমার হাত ভর্তি চাঁদের আলো ধরতে গেলেই নাই। লাইনগুলো দিয়ে রহস্য ধরে রাখলেন কিংবদন্তি লেখক। এখন তো সামনে এগোতেই হবে। বইটি শুরু হয় আনন্দ দিয়ে। অমলিন আনন্দ, যেখানে কোনো আক্ষেপ নেই। কিন্তু জীবন তো এমন নয়। জীবনে সুখ-দুঃখ উভয় যমজ ভাইয়ের মত বিরাজমান। হুমায়ূন আহমেদ’এর অপেক্ষা কারণে অকারণে সত্য কথা বলে। মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দেয়, আবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে নিজের ভুলগুলো দেখিয়ে দেয়। কষ্টের সীমা লঙ্ঘন করে সুখের হাতছানি দেয়। কিন্তু সুখ দেয় না। এই অপেক্ষাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আরও অসংখ্য পঁচিশ বছর যেন এভাবেই কেটে যায়। এই উপন্যাসের কিছু উক্তি ⭐মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অপেক্ষা নামের ব্যাপারটি খুব প্রয়োজন। অপেক্ষা হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার টনিক। (পৃষ্ঠাঃ ১৭৯) ⭐খুব খারাপ সময়ের পরপরই খুব ভাল সময় আসে। এটা জগতের নিয়ম। (পৃষ্ঠাঃ ১১৮) ⭐প্রকৃতি যাকে দেবার তাকে উজাড় করেই দেয়। যাকে দেবার না তাকে কিছুই দেয় না। (পৃষ্ঠাঃ ১০২) ⭐ছেলে পাগলের চেয়ে মেয়ে পাগল ভয়ংকর। (পৃষ্ঠাঃ ৯২) ⭐সত্যি কথা শুনতে সব সময় চিরতার পানির মতো লাগে। (পৃষ্ঠাঃ ২৬) ⭐হাসলে মেয়েদের যতো সুন্দর লাগে হাসি চেপে রাখলে তারচে দশগুণ বেশি সুন্দর লাগে। (পৃষ্ঠাঃ ৭৮)